প্রয়োজন একটু সচেতনতা

রাজধানী ঢাকা। যার বিশ বছর আগের চিত্র আর এখনকার চিত্রের মধ্যে অনেক পরিবর্তন। বিশেষ করে পরিবেশপরিচ্ছন্নতায় সেই পুরানো ঢাকা এখন তিলোত্তমা মহানগরী। বহুতল ভবন, প্রশস্ত রাস্তাঘাট, সুশোভিত পার্ক, হাতির ঝিল এসব এখন মহানগরীর অলংকার। আর এভাবে নগরীকে সাজিয়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (ডিসিসি)। যেখানে বসবাসকারী জনসাধারণ হিসাবে আমাদেরও রয়েছে কিছু দায়িত্বকর্তব্য। সেক্ষেত্রে লক্ষ্য একটাই – কিভাবে এই তিলোত্তমা নগরীকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখা যায়!

ঢাকা মহানগরীর পরিবেশপরিচ্ছন্নতা রক্ষার্থে কিছু নিয়মকানুন প্রচলিত আছে। যার মধ্যে ফুটপাত দখল অথবা অবৈধ ব্যবহার একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে এবং কোন দুর্ঘটনা এড়াতে সকলকে ফুটপাত ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। কিন্তু দোকানপাট, ওয়ার্কসপ, হকার্স ব্যবসা এগুলি এখনো এ শহরের বিভিন্ন ফুটপাত দখল করে রেখেছে। পরিত্যাক্ত ময়লাঅবর্জনা বা বর্জ্য দিয়ে নোংরা করছে চলাচলের পরিবেশ। প্রশাসন মাঝে মাঝে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছেন। কখনো কখনো উচ্ছেদ অভিযানও করছেন। কিন্তু আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না।

অনেক পাড়ামহল্লার রাস্তায় অবাধে ফেলে রাখা হচ্ছে ইটবালি অথবা বাড়ি তৈরীর বিভিন্ন সরঞ্জামাদি। যা যানবাহন ও মানুষের চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি করছে। সিটি কর্পোরেশনের বরাদ্দকৃত ডাস্টবিন থাকা সত্বেও কেউ কেউ বাসাবাড়ির উচ্ছিষ্ট ময়লাআবর্জনা ফেলছে যেখানে সেখানে। এর ফলে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। দূষিত হচ্ছে আমাদেরই জীবন। এসব ক্ষেত্রে নিয়মকানুন থাকলেও তার ব্যবহার আমরা করছি না। কারণ রুচিটা বদলাতে হবে আমাদের। আর সে জন্য প্রয়োজন নিজেদের জীবন সম্পর্কে সচেতনতা। একটু ভাল পরিবেশ, একটু পরিচ্ছন্নতা আমাদের জীবনধারাকে যে বদলে দিতে পারে, গড়ে তুলতে পারে দূর্ঘটনামুক্ত একটি শহর সেটা বুঝতে হবে সবার। এগিয়ে আসতে হবে কার্যকর পদক্ষেপে। “Clean your environment ! নিজের পরিবেশকে পরিষ্কার রাখো।

আমার পরিচিত একজন বিদেশিনীকে জানি। যিনি তার অফিসে যাওয়াআসার সময় কোন খাবার খেলে কাগজের ঠোংগাটা অথবা কোন উচ্ছিষ্ট অংশ তার ব্যাগে করে নিয়ে যান বাসার ডাস্টবিনে ফেলতে। আমরা কি পারি না একইভাবে শহরের পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় ভূমিকা রাখতে? এ ক্ষেত্রে দেশের ছাত্র সমাজের ভূমিকা অনেক। নিজ নিজ এলাকায় ছাত্ররা পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারে। উৎসাহিত করতে পারে গোটা এলাকাবাসীকে। একটি পলিব্যাগ যখন একজন ছাত্র নিজ হাতে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলবে। তখন অন্যান্য জনসাধারণও উৎসাহিত হবে। সচেতন হবে নগর পরিচ্ছন্নতায়।  

আমরা প্রায় সময়ই কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করে থাকি। একটি সুন্দর মহানগরী গড়ে তুলতে কর্তৃপক্ষই যথেষ্ট না। জনসাধারণ হিসেবে আমাদেরও ভূমিকা রয়েছে। নগরায়নে গৃহীত পদক্ষেপকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে আমাদেরই। শুধু প্রয়োজন একটু সচেতনতা! 

You may also like...